বিপিএলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্ব
খেলোয়াড় নিলামের সব প্রস্তুতি শেষ। আইপিএলের মতো এত আড়ম্বরপূর্ণ না হলেও ১৯
জানুয়ারির নিলামে জাঁকজমকের কমতি থাকছে না। তবে শঙ্কার হলো, মূল্যহীন হয়ে
যেতে পারে এ নিলাম। কারণ নিলামের অপেক্ষায় না থেকে এখনই ক্রিকেটারদের সঙ্গে
চুক্তি করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে ফ্যাঞ্চাইজিরা। ক্রিকেটাররাও দল পাওয়ার
ব্যাপারে অনিশ্চয়তা দূর করতে এ অনৈতিক কাজে বেশ সানন্দে এগিয়ে আসছে।
রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রধান পরামর্শক আতাহার আলী খানের কথায় এর ইঙ্গিতও
পাওয়া গেল, 'শক্তিশালী দল গড়ার লক্ষ্যে আমরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ
করছি।' কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো, আগে থেকেই খেলোয়াড় টানা হয়ে গেলে লোক দেখানো
নিলামের কী প্রয়োজন! এর জবাবে অবশ্য আতাহার আলী খান বলেছেন, 'তিনি যা বলতে
চেয়েছিলেন তা ঠিকমতো বোঝাতে পারেননি।' এ কথার জন্য তিনি 'সরি'ও বলেছেন।
তার হয়ে লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে দুঃখ প্রকাশ করলেন রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির
চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান মোহনও।
একটি সূত্র জানিয়েছে, 'সি' ক্যাটাগরিতে থাকা চার দেশি ক্রিকেটারের সঙ্গে
গোপনে চুক্তি সেরে ফেলেছে ঢাকা ফ্র্যাঞ্চাইজি। নিলামে দেশি 'সি' ক্যাটাগরির
ক্রিকেটারের ভিত্তিমূল্য ২০ হাজার ডলার। তাদের ৩৫ হাজার ডলারে চুক্তিবদ্ধ
করা হয়েছে বলেও জানায় ওই সূত্র। ওই চার ক্রিকেটারের একজন অবশ্য চুক্তি সেরে
ফেলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে তাদের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগের বিষয়টি
তিনি অকপটেই স্বীকার করেছেন। আলোচনা বেশিদূর এগোয়নি বলেও জানান তিনি।
নিলামের আগে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলাটা যে অনৈতিক, সেটা
নাকি তারা জানেনই না। তবে ওই ক্রিকেটার এত 'প্যাঁচঘোঁচ বোঝেন না' ভান
করলেও জানা গেছে, অনেক ক্রিকেটার গোপনে চুক্তি করতে বেশ তৎপর। এদিকে এসব
চুক্তিকারীদের কঠোর ভাষায় হুশিয়ার করে দিয়েছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের
চেয়ারম্যান গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, 'কোনো ক্রিকেটার যদি নিলামের আগে
ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে চুক্তি করে তাহলে কোনোভাবেই তাকে আমরা বিপিএলে রাখব
না। এটা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।' গতকাল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে সভায়
জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নিলামে ছয় দলের জন্য ছয়টি টেবিল থাকবে। কোনো
ফ্র্যাঞ্চাইজির টেবিলে ছয়জনের বেশি বসতে পারবে না। সেখানে ফোন, ইন্টারনেট,
ফ্যাক্স ব্যবহার নিষেধ। শুধু ক্যালকুলেটর এবং ইন্টারনেট সংযোগবিহীন ল্যাপটপ
ব্যবহার করা যাবে। আর ৫ লাখ ডলারের বেশি দিয়ে কোনো ক্রিকেটার কেনা যাবে
না। প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজি ১৮ জন খেলোয়াড় কিনতে পারবে। এর মধ্যে ১০ জন দেশি
এবং ৮ জন বিদেশি। কোনো দলের নাম ও লোগোতে টাইগার শব্দটি রাখা যাবে না। কারণ
এটা বিসিবির নিজস্ব। নিলামে ছয় ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূল্য যে
হাঁকাতে পারবে সে পাবে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারকে। আগে থেকেই খেলোয়াড় টানা হয়ে
গেলে নিলামের কী প্রয়োজন! আর গোপনে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ
ক্রিকেটারকে নিলামে তোলা হলে কী হবে! তখন দেখা যাবে, আগে থেকে নিশ্চিত করে
ফেলা ক্রিকেটারের বেলায় ফ্র্যাঞ্চাইজি লাগামহীন মূল্য হাঁকছে। যে কোনো
মূল্যে সে ওই ক্রিকেটার দলে নেবে। কিন্তু সেখানেই শুভঙ্করের ফাঁকি। ওই
ক্রিকেটারকে নিলামে ওঠা মূল্য দেওয়া হবে না। গোপনে আগে করা চুক্তি মোতাবেক
টাকা দেওয়া হবে। যেমনটা পোর্ট সিটি লীগে (পিসিএল) ওপেন সিক্রেট হয়েছিল। তবে
ক্রিকেটারদের জেনে রাখা উচিত, এনবিআর কিন্তু নিলামে ওঠা মূল্য মোতাবেকই
আয়কর আদায় করবে।
No comments:
Post a Comment